ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর (বাংলাদেশ দমকল বাহিনী ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি জরুরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম জনগণের সেবায় নিবেদিত।
প্রথম সাড়া প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে এ বিভাগের কর্মীরা অগ্নি নির্বাপণ, অগ্নি প্রতিরোধ, উদ্ধার, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান, মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে প্রেরণ ও দেশী-বিদেশী ভিআইপিদের অগ্নি নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে।[১] উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনাকারী সংস্থা হিসেবে সব ধরনের প্রাকৃতিক ও মানবিক দুর্ঘটনার উদ্ধারকার্যে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে থাকে।
ফায়ার ফাইটার পদের জন্য শিক্ষাগত ও অন্যান্য যোগ্যতা কি?
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ফায়ারম্যান হিসেবে কাজের জন্য মাধ্যম বা সমমানের পরীক্ষা পাশ করতে হবে। তবে কেউ অভিজ্ঞ ও ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হলে তার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হয়।
যে কোন স্বীকৃত বোর্ড হতে নূন্যতম দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ’তে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
শারীরিক যোগ্যতাঃ-
- উচ্চতাঃ ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি (নূন্যতম); মহিলাঃ ৫ ফুট ২ ইঞ্চি (নূন্যতম)
- বুকের মাপঃ ৩২ ইঞ্চি (নূন্যতম); মহিলাঃ ৩০ ইঞ্চি (নূন্যতম)
- ত্রুটিমুক্ত শারীরিক গঠন এবং অবিবাহিত হতে হবে।
একজন ফায়ার ফাইটার হয়ে উঠবেন কীভাবে?
যে ব্যক্তিরা অগ্নিনির্বাপক হতে চান তাদের অবশ্যই সিভিল ডিফেন্স এবং ফায়ারফাইটিং বিভাগে অধ্যয়ন করে 2 বছরের শিক্ষা সম্পূর্ণ করতে হবে, যা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষা প্রদান করে। যে ব্যক্তিরা বিভাগটি পড়ে ডিপ্লোমা করেছেন তারা এই বিভাগের বিভিন্ন পরীক্ষা দিতে পারেন এবং অগ্নিনির্বাপণের পেশা অনুশীলন করতে পারেন।
যে ব্যক্তিরা অগ্নিনির্বাপক হতে চান তাদের অবশ্যই নিম্নলিখিত প্রয়োজনীয়তাগুলি পূরণ করতে হবে;
- তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের নাগরিক হচ্ছে।
- পুরুষ প্রার্থীদের অবশ্যই 1.67 সেন্টিমিটারের বেশি লম্বা হতে হবে এবং মহিলা প্রার্থীদের 1.60 সেন্টিমিটারের বেশি হতে হবে।
- KPSS পরীক্ষা থেকে কমপক্ষে 70 পয়েন্ট পেতে।
- 30 বছরের বেশি বয়সী হওয়া উচিত নয়।
- এর আগে পাবলিক ইভেন্টের জন্য শাস্তি পাননি।
একজন ফায়ার ফাইটার এর কাজ কি?
ফায়ার ফাইটাররা প্রথম কাজ হিসেবে আগুনের প্রতি সাড়া দেয়। কোনো জায়গায় আগুন লাগলে প্রথমে ফায়ার ব্রিগেডকে ডাকা হয়। ফায়ার ব্রিগেড, যারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং দুর্দশাগ্রস্ত লোকদের সাহায্য করে। এই সমস্ত প্রক্রিয়া একটি পরিকল্পিত পদ্ধতিতে সঞ্চালিত হয়। অন্য কথায়, একজন অগ্নিনির্বাপক ব্যক্তি স্বাধীনভাবে কাজ করেন না।
দমকলকর্মীরা শুধু আগুন নেভাতেই নয়, বিভিন্ন উদ্ধার প্রচেষ্টায়ও অংশ নেয়। এই মিশনের সময় দমকল কর্মীদের শক্তিশালী এবং শান্ত থাকতে হবে। প্রতিটি অনুষ্ঠানে তাকে অবশ্যই পেশাদারভাবে হস্তক্ষেপ করতে হবে।
আমরা অগ্নিনির্বাপকদের দায়িত্ব নিম্নরূপ তালিকাভুক্ত করতে পারিঃ
- আগুনের বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করা।
- অগ্নিকাণ্ডের এলাকায় প্রয়োজনীয় কাজ করা।
- অগ্নিদগ্ধ এলাকায় দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য করা।
- আগুন এলাকা থেকে আহত ব্যক্তিদের সঠিকভাবে অপসারণ করা।
- কোথাও আটকে পড়া প্রাণী বা মানুষ উদ্ধার করুন।
- ভূমিকম্প ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি রোধে কাজ করা।
- তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা করেন।
- এটি প্রয়োজন হলে জাম্প শীট খোলে।
- এটি আগুনের জায়গাগুলিতে প্রয়োজনীয় জল শক্তিবৃদ্ধি করে।
পড়ুনঃ পুলিশের এস. আই পদে নিয়োগ পদ্ধতি এবং ক্যারিয়ারের সুবিধা-অসুবিধা কি?
ফায়ার ফাইটার এর বেতন এবং গ্রেড কত?
ফায়ার ফাইটার (পুরুষ) বেতন স্কেলঃ ৯০০০ টাকা থেকে ২১,৮০০ টাকা পর্যন্ত। ফায়ার ফাইটার পদের বেতন গ্রেড হচ্ছে ১৭ তম।
এই পেশাগত গোষ্ঠীর বেতন সাধারণত মানুষের শিক্ষার স্তর অনুসারে পরিবর্তিত হয়। 2022 সালের হিসাবে সর্বনিম্ন ফায়ার ফাইটার বেতন 5 হাজার 728 টিএল হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল, যেখানে সর্বোচ্চ ফায়ার ফাইটার বেতন ছিল 5 হাজার 949 টিএল।
ফায়ার সার্ভিসের বেতন সমূহ নিম্নরূপ:
- 2022 (জানুয়ারি-জুলাই) মাধ্যমিক এবং উচ্চ বিদ্যালয় স্নাতক ফায়ার ফাইটার বেতন: 5,728 TL
- 2022 (জানুয়ারি-জুলাই) কর্পোরাল-হাই স্কুল এবং মাধ্যমিক স্কুল স্নাতক অগ্নিনির্বাপক বেতন: 5,843 TL
- 2022 (জানুয়ারি-জুলাই) সহযোগী এবং স্নাতক ডিগ্রি ফায়ার ফাইটার বেতন: 5,751 TL
- 2022 (জানুয়ারি-জুলাই) সার্জেন্ট-হাই স্কুল এবং স্নাতক ফায়ার ফাইটার বেতন: 5,843 TL
- 2022 (জানুয়ারি-জুলাই) সার্জেন্ট, সহযোগী ডিগ্রি এবং স্নাতক ফায়ার ফাইটার বেতন: 5,865 TL
- 2022 (জানুয়ারি-জুলাই) সুপারভাইজার-অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি স্নাতক ফায়ার ফাইটার বেতন: 5,947 TL
- 2022 (জানুয়ারি-জুলাই) সুপারভাইজার- স্নাতক ফায়ার ফাইটার বেতন: 5,949 TL
ফায়ার ম্যান কাকে বলে?
বিভিন্ন দেশে বা রাজ্যে ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত কর্মীদের নানান নামে সম্বোধন করা হয়। কোথাও তাদের ফায়ারম্যান তো কোথাও আবার ফায়ারফাইটর তো কোথাও আবার দমকল বা কোথাও ফায়ার সেফটি পারসন বা ফায়ার অপারেটর বা ফায়ার পার্সোনেল বলতে শোনা যায়।
তবে নাম শুনে আলাদা মনে হলেও তাদের প্রাথমিক কাজ আগুন নেভানো উদ্ধার কার্য সম্পাদন করা। সাধারণত যারা আগুন নেভানো, জীবন সম্পত্তি রক্ষা করা, আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করা কাজের সাথে যুক্ত তাদেরকে ফায়ারম্যান বলে।
ফায়ারম্যান এর কাজ কি?
শুধু ফায়ার সার্ভিস নয়, যে কোন সার্ভিসে জয়নিং এর পূর্বে কি কাজ করতে হবে সেটি যদি জানা থাকে তাহলে যেমন মানসিক ও শারীরিক ভাবে প্রস্তুত হতে সাহায্য হয়। তেমনি মনে রাখতে হবে সব সার্ভিস সবার জন্য নয়। প্রার্থী যদি আগে থেকে অবগত থাকে তাহলে সে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে কাজটিতে জয়নিং করা তার পক্ষে আদৌ সুবিধাজনক হবে কি হবে না।
সাধারণত দু’ধরনের ফায়ারম্যান দেখা যায়, তা হচ্ছে,
- যারা প্রাইভেট সংস্থায় কোম্পানিতে কর্মরত স্টাফ ও বিল্ডিংয়ের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে থাকা ফায়ারম্যান।
- সরকারি দপ্তরে কর্মরত ফায়ারম্যান যারা সেই নির্দিষ্ট জেলায় বা রাজ্যের সুরক্ষার দায়িত্বে থাকে।
এখানে সরকারি দপ্তরে কর্মরত ফায়ারম্যান এর কাজ নিয়ে আলোচনা করব
আরও পড়ুনঃ বিমান বাহিনীর অফিসার ক্যাডেট পদে যোগ দিতে কি কি যোগ্যতা লাগে?
ফায়ারম্যান এর প্রধান দায়িত্ব কর্তব্য এবংকাজ
অগ্নিনির্বাপক কর্মী বা ফায়ারম্যান এমন কর্মী যারা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্ঘটনা বা অন্যান্য দুর্যোগ, বিশেষ করে আগুনে আগুন নেভানোর কাজ করে। অগ্নিনির্বাপকদের প্রথম লক্ষ্য হল নিরাপত্তা এবং নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি সব মূল্যে রক্ষা করা।
অগ্নি নির্বাপন করা
দেখা যায়, সরকারি দপ্তরে কর্মরত এক ফায়ারম্যান এর প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হল আগুন নেভানো। সেটি যে ধরনের আগুন হোক না কেন যেমন কোন বাড়িতে বা কারখানার আগুন, জঙ্গলে লাগা আগুন, মিটার ঘরে লাগা আগুন ইত্যাদি। এক কথায় বলতে গেলে আগুন যে ধরনেরই হোক না কেন আগুন লাগার খবর পেলে ফায়ারম্যান কে যেতে হবে।
উদ্ধার কার্য
শুরু থেকেই ফায়ারম্যান এর প্রধান কাজ তো আগুন নেভানো কিন্তু উদ্ধারকার্য কে ফায়ার সার্ভিসে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। ধরা যাক কোনো উঁচু বিল্ডিং এ আগুন লেগেছে এবং ফায়ার ব্রিগেড সেখানে পৌঁছে দেখছে সেই বিল্ডিং এ অনেক মানুষ আটকে আছে, সে ক্ষেত্রে যদি কম ফায়ার ম্যান থাকে তাহলে প্রথমে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করবে এবং পরে আগুন নেভাবে। আর যদি বেশি সংখ্যক ফায়ারম্যান থাকে তাহলে দুটি কাজ একসাথে করা যেতে পারে।
তাছাড়া যদি কোন মানুষ বা পশু কোন গভীর গর্তে বা কুয়োতে পড়ে গেছে এবং সেখানকার মানুষ বহু চেষ্টার পরেও সেই মানুষ বা পশুকে উদ্ধার করতে পারছে না, সেক্ষেত্রে তারা ফায়ার ব্রিগেডকে ফোন করতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে এক্ষেত্রে যদি পশুটি জীবত থাকে তাহলেই ফায়ারম্যান তাকে উদ্ধার করবে, আর যদি মারা যায় সেক্ষেত্রে এটি ফায়ারম্যান এর কাজ নয়। এবং পশুটি যদি হিংস্র বা জংলী হয় তাহলেও তাকে উদ্ধার করা ফায়ারম্যান এর কাজ না।
শান্তি স্থাপন ডিউটি
যে কোন সময় এমন কোন পরিস্থিতি যেখানে দাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বা আগুন লাগার সম্ভাবনা আছে (যেমন কিছু বিশেষ উৎসব, মেলা, আন্দোলন, মিছিল, ভোট কাউন্টিং এর জায়গা) সেই স্থানে ফায়ার ব্রিগেড এর একটি বা তার বেশি গাড়ি রাখা হয় সাময়িক সময়ের জন্য। যাতে কোনো আগুন লাগলে চটজলদি তার মোকাবিলা করা যায়।
ভিআইপি ডিউটি
জেলা সদর বা বিভাগীয় সদরে কিছু বিশেষ ভবন আছে যেমন প্রধান মন্ত্রীএর আবাস, রাষ্ট্রপতি এর আবাস, সুরক্ষা ভবন, হাইকোর্ট ইত্যাদি জায়গায় ফায়ার ব্রিগেডের একটি গাড়ি অগ্নি সরঞ্জামের সাথে সব সময় প্রস্তুত থাকে। ২৪ ঘন্টা Rotation (যার যখন পালা পরবে তাকে যেতে হবে) অনুসারে ডিউটি হয়।
তাছাড়া বড় ধরনের নেতার যদি সমাবেশ বা সভা নির্দিষ্ট রাজ্যে বা জেলায় থাকে, সেক্ষেত্রেও ফায়ার ব্রিগেডের এর একটি গাড়ি সাময়িক সময়ের জন্য রাখা হয়।
হেলিপ্যাড ডিউটি
হেলিপ্যাড ডিউটি শব্দটি শুনে হয়তো আপনি আশ্চর্য হচ্ছেন যে হেলিপ্যাড ডিউটি আবার কি! আপনি যদি ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখেন আপনার জেলায় কোথাও না কোথাও একটি স্থায়ী বা অস্থায়ী হেলিপ্যাড আছে। অর্থাৎ যে স্থান থেকে হেলিকাপ্টার উঠা-নামা করে।
বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা ভোট প্রচারের সময় বড় মাপের নেতারা হেলিকপ্টারে করে ভ্রমণ করে থাকে। হেলিকাপ্টার হইতে যদি কোন আগুন লাগে তার মোকাবিলার জন্য সেখানে ফায়ারম্যান এর ডিউটি পড়ে।
Demonstration বা Awareness ডিউটি
আগুন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বা আগুন কে কিভাবে সহজে নেভানো যায় তা দেখানোর জন্য অনেক সময় স্কুল, কলেজ ও এলাকায় ফায়ার ব্রিগেড এর তরফ থেকে ফায়ার অফিসের সাথে ফায়ারম্যান কে সচেতনামূলক কার্যকলাপ করতে হয়। মূলত এটি ফায়ার অফিসার করে থাকেন কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে ফায়ারম্যানও করে।
Sentry বা টেলিফোন ডিউটি
প্রত্যেকটি ফায়ার ব্রিগেড এর ফায়ার ম্যান কে নিয়মিত সেন্ট্রি ডিউটি করতে হয়। সেন্ট্রি বলতে মূলত ফায়ার স্টেশনের দেখাশোনা বলা যেতে পারে। সেন্ট্রি ডিউটি চলাকালীন ফায়ার স্টেশনের যদি কেউ আসে বা যায়, সেন্ট্রি কে সে বিষয়ে অবগত থাকতে হবে কে এসেছে কি উদ্দেশ্যে ইত্যাদি। তার সাথে ফায়ার স্টেশনে যদি কোন ফোন কল আসে ফায়ার বেল দিয়ে তা সহকর্মী দের জানান।
তাছাড়া ফায়ার ব্রিগেড এর গাড়ি যাতে ফায়ার কলের সময় সহজে ফায়ার স্টেশন থেকে বের হতে পারে তার সামনে কোন গাড়ি বা বস্তু না রাখা থাকে ইত্যাদি ফায়ারম্যান কে সেন্ট্রি ডিউটি চলাকালীন দেখতে হয়।
সম্পর্কিতঃ সেনাবাহিনীর জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার এর কাজ কি? নিয়োগ পদ্ধতির বিস্তারিত
ফায়ার ম্যানের বেতন কত?
ফায়ার সার্ভিস যেহেতু সরকারের অধীন সেহেতু এক একটি দেশে ফায়ারম্যান এর বেতন এক এক রকম। তবে একজন নতুন ফায়ারম্যান এর মাসিক বেতন আনুমানিক ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা
প্রাইভেট সংস্থার ফায়ারম্যান এর আনুমানিক বেতন বাংলাদেশি টাকায় ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা । এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে কোম্পানির উপর, কিছু কম বা বেশি হলেও হতে পারে।
ফায়ারম্যান ই এখন ‘ফায়ারফাইটার
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের ‘ফায়ারম্যান’ পদের নাম পরিবর্তন করে ‘ফায়ারফাইটার’ করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অগ্নি অনুবিভাগ থেকে ২৪ জানুয়ারি জারি হওয়া এক আদেশে এই পরিবর্তন আনা হয়। গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির ১৫তম সভার সুপারিশের আলোকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের সাংগঠনিক কাঠামোভুক্ত ‘ফায়ারম্যান’ পদবি পরিবর্তন করে ‘ফায়ারফাইটার’ নামকরণে সরকারি মঞ্জুরি নির্দেশক্রমে জ্ঞাপন করছি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২০ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ফায়ার সার্ভিসের ‘ফায়ারম্যান’ পদের নাম ‘ফায়ারফাইটার’ হওয়া সমীচীন মর্মে সানুগ্রহ অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রধানন্ত্রীর সেই অভিমতের আলোকে ফায়ারম্যান পদের নাম পরিবর্তনের জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়। সকল দাফতরিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে অবশেষে গত ২৪ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত আদেশ জারি করা হয়। তাই এখন থেকে সকল দাফতরিক কাজে এবং গণমাধ্যমে পদের নাম উল্লেখ করার ক্ষেত্রে ফায়ারম্যান-এর পরিবর্তে ‘ফায়ারফাইটার’ পদনাম ব্যবহার করার জন্য সকলকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়।
ফায়ার সার্ভিস এর ফায়ার ফাইটার সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
একজন ফায়ারম্যান কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান বা শিল্পে কাজ করেন?
বর্তমান সময়ে বড় বড় আবাসিক স্থাপনা, স্যাটেলাইট সিটি, শিল্প কারখানার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতে সেসব প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা নিশ্চিতকরনের তাগিদে নিজস্ব অগ্নি নির্বাপন কর্মী বা ফায়ারম্যান নিয়োগ দেয়। সেনাবাহিনীতেও আলাদা নিয়োগের মাধ্যমে ফায়ারম্যান রাখা হয়।
একজন ফায়ারম্যান কী ধরনের কাজ করেন?
একজন ফায়ারম্যান মূলত বড় বড় প্রতিষ্ঠানে নিয়োগকৃত নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক কর্মী। প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিস আগমনের পূর্বে একজন ফায়ারম্যান যতটা সম্ভব অগ্নি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ক্ষয়ক্ষতি কমাবার চেষ্টা করেন। একজন ফায়ারম্যান অগ্নি নির্বাপক গ্যাস বা রিসার্ভকৃত পানি দিয়ে অগ্নি নির্বাপনের চেষ্টা করেন। সাথে সাথে আটকে পরা মানুষদের নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিত করেন। অগ্নি দুর্ঘটনা ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের যে কোন ধরনের দুর্ঘটনায় একজন ফায়ারম্যান কাজ করেন। অনেক প্রতিষ্ঠানে ফায়ারম্যান নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবেও কাজ করেন।
একজন ফায়ারম্যানের যোগ্যতা কী?
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ফায়ারম্যান হিসেবে কাজের জন্য মাধ্যম বা সমমানের পরীক্ষা পাশ করতে হবে। তবে কেউ অভিজ্ঞ ও ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হলে তার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হয়। ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স থেকে অবসরপ্রাপ্ত দমকল কর্মীদের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয় । ফায়ারম্যান হিসেবে কাজ করতে চাইলে কর্মঠ, পরিশ্রমী এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে। এ পেশায় সাহসিকতার পরিচয় দেওয়া বাঞ্ছনীয়।
একজন ফায়ারম্যানের মাসিক আয় কেমন?
প্রতিষ্ঠানের আকার এবং অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে একজন ফায়ারম্যানের বেতন মাসিক ১৫-২০ হাজার টাকা হতে পারে।
যাবার আগে শেষ কথা
উপরিক্ত ডিউটি ছাড়াও আরও বেশ কিছু ডিউটি ফায়ারম্যান বা ফায়ারফাইটার কে করতে হয়। যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো পরিস্থিতিতে যদি কোনো রাস্তা গাছ পড়ে আটকে গেছে , তা কেটে সরানোর জন্য ফায়ার ব্রিগেডকে ডাকা হয়।
বিভিন্ন হাসপাতালে গভীর রাতে আগুন লাগার খবর বেশ কয়েকবার টিভির পর্দার শিরোনামে দেখা গেছে। তাই সরকারি হাসপাতালের সুরক্ষার জন্য বিশেষ করে রাতে বা কোথাও কোথাও সারাদিনের জন্য ফায়ার ব্রিগেড কে থাকতে হয়। তার সাথে ভুললে চলবে না ফায়ার ফাইটিং করতে যে সরঞ্জাম ব্যবহীত হয় সেগুলি মেইনটেনেন্স করা ফায়ারম্যান বা ফায়ারফাইটার এর কাজের মধ্যে পরে।